আমরা প্রায়ই শুনে থাকি প্রবাসীদের কাছ থেকে প্রবাসীদের জীবন বড় কষ্টের জীবন। সত্যিই কি প্রবাস জীবন কষ্টের। নাকি এটা এক ধরণের হতাশার নাম প্রবাসীদের কষ্টের জীবন। এই পোষ্টে আলোচনা করব প্রবাসীরা কষ্টে থেকেও কি করে সুখে থাকতে পারে। {getToc} $title={প্রবাসীদের জীবন সুন্দর করার কৌশল}
প্রবাস কি?
আমরা সবাই জানি প্রবাস হল যে বিদেশে থাকে আর কাজ করে দেশে টাকা পাঠায়। কিন্তু কেউ কেউ এই প্রবাস অর্থ যদি ভেবে থাকেন প্রবাসী তারাই যারা নিজের পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন থেকে দূরে থাকে, কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে যে সুখকে বিসর্জন দেয় তাকেই প্রবাস বলে। সত্যি বলতে আপনি একজন প্রবাসী আপনিই ভালো বলতে পারবেন। বা তার একটা সংজ্ঞা দিতে পারবেন।
Read More: আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি
কেন প্রবাস জীবন বড় কষ্টের জীবন?
এই পৃথিবীতে কে নেই যার জীবনে সে কষ্ট করেনি। এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি সেও জীবনে অনেক কষ্ট করে গেছেন। আপনি একজন প্রবাসী নিজের দেশ ছেড়ে একটু আছেন দূরে আছেন, আপনার বউকে ছেড়ে দূরে আছে, নিজের মা-বাবা থেকে দূরে আছে এটাকেই কি কষ্ট ভাছেন। নাকি অন্যকিছু সেটা কি আপনি খুব বেশি পরিশ্রম করেন তাও আবার নিয়মিত।
আমি থাকলে এই সবগুলোকে একটা কষ্ট বানাতাম। আর সেই গুলোকে সারাদিনে হয়তো ৫ মিনিট সময় দিতাম এমনকি মাসেও দিতাম এই ৫ মিনিট। তো এখন প্রশ্ন হল কি করে কষ্টের মাঝে সুখে বেঁচে থাকা যায়।
কষ্ট থেকে সুখে রূপান্তর
সুখ-দুঃখ দুই ভাই। এক ভাই দূরে গেলেও অপর ভাই সাথে থাকবে। আপনি কি একাকিত্ব নামে কোনো শব্দ শুনেছেন। আপনি ধরুন ১০ বছর বা ৫ বছরের জন্য বিদেশে গেছেন। এই ৫ বছর আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করে যুদ্ধ করে টিকে থাকতে হচ্ছে।
আর এই টিকে থাকার জন্য কিছু কৌশল যদি আপনি শিখতে পারেন তাহলে আপনার জন্য প্রবাস জীবন যেমন হবে সুখের তেমনি হবে আরামদায়ক।
প্রবাস জীবন সুখের রাখার কৌশল-
ধর্ম
আপনি যেই ধর্মেই থাকবেন ঠিক সেই ধর্মকে পালন করুন। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই মুসলিম। আমার আপনি প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করুন। ফজরের নামাজ শেষে পারলে হালকা শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করুন।
কেননা সকালের শুদ্ধ বাতাস মনকে সজীব রাখতে অনেক অনেক সাহায্য করে। তাছাড়া যদি ৫ ওয়াক্ত নামাজ সঠিক সময় না পড়তে পারলেও যখন সময় পাবেন প্রয়োজনে কাজা নামাজ আদায় করুন। নামাজ পড়লে নিজেকে পরিশুদ্ধ মনে হয়।
পরিকল্পনা করুন
আপনি আপনার সারাদিন কোথায় কখন কিভাবে সময় দিবেন তার একটা রুটিন বা প্লেন করে ফেলুন। পরিকল্পনা করলে সময় খুব সহজেই চলে যায়। তখন আর গায়ে বাজে না সময় কখন যাবে।
পরিশ্রম
আপনি যেহেতু বিদেশে গেছেন, অধিক টাকা পয়সা আয়ের উদ্দেশেই তাই আপনাকে পরিশ্রম করতে হবেই। কেননা পরিশ্রম ছাড়া ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না। ধরুন- আপনি এখন ফুলবল খেলছেন যদি বলকে খেলতে খেলতে যদি অপর গোল পোষ্টে না নিয়ে যান তাহলে কিন্তু গোল হবে না।
আপনার শরীরের ঘাম জড়িয়ে হলেও আপনাকে গোল দিতে হবে, তাই বলে কি আর পরিশ্রম হবে। আপনি কি জানেন, খাবার খাওয়াটাও একধরনের পরিশ্রম। এর প্রমাণ হিসেবে আমরা খাবার পর বিশ্রামে যাই।
ইতিবাচক মনোভাব
দেখা যায় প্রায় বেশি ভাগ নারী-পুরুষ বিবাহিত প্রবাসে পাড়ি দেয়। বেশি ভাগ প্রবাসিকে দেখা যায় রাতে শোয়ার সময় পরিবারের কথা ভেবে থাকে, ভাবতে ভাবতে এক সময় দেখায় নিজের প্রতি একটা পরিবারের দুর্বলতা কাজ করে। এটা করা যাবে না।
আপনাকে এটা মাথায় রাখতে হবে, পুরুষের কখনো দুর্বল হতে হয় না, বরং দুসময়ে পুরুষকে শক্ত হতে হয়। খবরে প্রায় দেখতে পাই, অমুক প্রবাসির বউ, অন্য একটা লোকের সাথে বাহির হয়ে গেছে। আবার এটাও দেখা যায়, সেই বউ মাঝে মাঝে প্রবাসীর টাকা সহ নিয়ে পালিয়ে যায়।
এখানে একটা কথা তা হল, আপনার বউ যায় যাক, বউ গেলে বউ পাওয়া যায়। কিন্তু টাকা গেলে টাকা পাওয়া যায় না। তাই বিদেশ থেকে যত টাকা পাঠাবেন সব নিজের বাবা-মার নামে আর যদি বাবা-মা না থাকে তাহলে এমন অংশের টাকা পাঠান যা বউ চলতে ফিরতে পারে, যদি সে আরো টাকা চাও তখন তাকে অজুহাত দেখাবেন।
একটু কৌশলী হন। ইনকাম কম। কোম্পানির লস ইত্যাদি। সব সময় নিজেকে একটা ইতিবাচক ভাববেন। কেননা আপনি নিজেও জানেন আপনি কিন্তু কারো উপর নির্ভরশীল না অর্থাৎ অন্যের টাকায় চলেন না। তাছাড়া আপনিও পারলে ব্যাংকে কিছু টাকা জমান।
বউ নিয়ে কিছু কথা
যে সকল নারী সতী তারা কখনো আপনাকে ভুলে যাবে না, আপনার দুঃসময়েও সে পাশে থাকবে। সে কখনো আপনার টাকা মেরে দিবে না। বরং আপনার উন্নত চাইবে, তবে এর সংখ্যা খুবই কম। আপনার ভাগ্য ভালো থাকলে ভালো।
আর যদি বৌ প্রতারক হয় তাহলে তাকে তালাক দিয়ে দিন, ভাই টাকা থাকলে বউয়ের অভাব হবে না। যে কিনা আপনার আমানত রক্ষা করতে পারে না, সে কিসের বউ, তাকে আপনি যদি খুব বেশি ভালোবাসেন সে যদিও অপরাধ করে, তাকে ক্ষমা করে দিন আবার ঘরে নিয়ে আসুন।
আপনি হয়তো বোধয় রশিদ করিমের একটা নাটক দেখেন নি, নাটকটির নাম ‘ভালোবাসা একটি লাল গোলাপ’। এই নাটক দেখলে বুঝতে পারবেন। তাই একটু সাবধান হউন।
মেনে নেয়া
সব কিছু সহজ করে মেনে নিন, যতই কঠিন কাজ হউক না কেন, যতই পরিশ্রম হউক, একটু কষ্ট করেন, পরে সুখ আসবেই।
নিজের প্রতি খেয়াল
নিজের শরীরের খেয়াল রাখুন, সেজন্য সৃষ্টিকর্তা কিন্তু প্রতি বছর সিজেনে সিজেনে গাছে ফল দেয়, সেগুলো কিনে খান, দেখবেন শরীরের কোনো রোগের উপশম দেখা দিবে না। যেমন- আম, কাঁঠাল, জাম, লিচু, পেঁপে, পেয়ারা, আনারস বিভিন্ন ফল খান, আমরা কিন্তু জানি প্রতি বছরই কিন্তু কোনো না কোনো গাছে ফল থাকেই।
আপনার কি এটা খেয়াল আছে, আপনি যেমন আশা করেন আপনার টাকা দিয়ে আপনার পরিবারের মা-বাবা, স্ত্রী-ছেলেমেয়ে যেমন ভালো থাকবে। ঠিক তেমনি আপনার পরিবারের মা-বাবা, স্ত্রী-ছেলেমেয়ে আপনার ভালো থাকাটা আশা করে তাই নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। একটা প্রবাদ ছোট থেকে শুনে আসছি তা হল, ‘সুস্বাস্থ্যে সকল সুখের মুল।’
বিশেষ কথা
কখনো ভুলেও রাতে মোবাইলে সময় দিবেন না খুব বেশি প্রয়োজন না হলে, মোবাইলে সময় দিলে মস্তিস্কের উপর একটা নেগেটিভ প্রভাব পড়ে। তাই মোবাইল থেকে দূরে থাকুন।
শেষকথা
আমার দীর্ঘ বিশ্বাস আপনি এই পোষ্টটি পড়ে অনেক উপকৃত হবেন। আপনার অন্য প্রবাসী ভাইকে শেয়ার করে জানিয়ে দিন তাতে করে তারও হতাশার প্রবাস জীবন বড় কষ্টের জীবন আনন্দের হয়।
Tags:
প্রবাসী