আখতারুজ্জামান ইলিয়াস (১৯৪৩-১৯৯৭) সমাজ, ঐতিহ্য ও ইতিহাস সচেতন একজন শক্তিমান লেখক। তার রেইনকোট গল্পটি প্রকাশিত হয় ১৯৯৫ সালে। পরে এটি লেখকেরর সর্বশেষ গল্পগ্রন্থ ‘জাল স্বপ্ন স্বপ্নের জাল’ (১৯৯৭) গ্রন্থের সংকলিত হয়। এর গল্পের পাঠ গ্রহণ করা হয়েছে ‘আখতারুজ্জামান ইলিয়াস রচনারসমগ্র ১’ থেকে।
{getToc} $title={রেইনকোট গল্পের বিস্তারিত দেখুন}
নামকরণ
মুক্তিযোদ্ধা শ্যালকেরর রেইনকোট গায়ে দিয়ে সাধারণ ভিতু প্রকৃতির মুরুল হুদার মধ্যে সাহস ও দেশপ্রেম সঞ্চারিত হয় তাই রেইকোটটিকে গল্পে প্রতীক হিসেবে ধরা হয়েছে েএবং পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তুর অনুসরণে প্রতীকী তাৎপর্যের ওপর ভিত্তি করে আলোচ্য গল্পের নামকরণ করা হয়েছে।
চরিত্রসমূহ
- নুরুল হুদা (কেন্দ্রীয় চরিত্র)
- আসমা (নুরুল হুদার স্ত্রী)
- মিন্টু (আসমার ভাই সে মুক্তিযোদ্ধে গেছে)
- আফাজ আহমেদ ( ঢাকা কলেজের প্রধান শিক্ষক/ প্রিন্সিপাল, যে কিনা রাজাকারের একজন সদস্য)
- ইসহাক মিয়া ( ঢাকা কলেজের পিউন প্রধান শিক্ষকের ভাবশিষ্য)
- আব্দুস সাত্তার মৃধা ( প্রফেসর )
- উর্দুর প্রফেসর আকবর সাজিদ,
- কর্নেল জেনারেল (পাকিস্তান মিলিটারির জেনারেল)
রেইনকোট গল্পটি মূলত চলিত রীতি প্রয়োগ ঘটিয়েছেন লেখক।
রেইনকোট গল্পের মূলভাব
মুক্তিযুদ্ধের সময়কার ঢাকার পরিস্থিতি নিয়ে রেইনকোট গল্পটি রচিত। রেইনকোট গল্পে মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
গেরিলা বাহিনী ঢাকা কলেজের সামনের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার ধ্বংস করে দিয়েছে েএবং ফিরে যাওয়ার সময় প্রিন্সিপাল আফাজেরর বাড়িতে গ্রেনেড ছুরেছে।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কলেজের শিক্ষকদের প্রিন্সিপালের মাধ্যমে তলব করে। পিয়ন িইসহাক মিয়া নুরুল হুদাকে সেই খবরটাই দিতে আসে। বারবার আসার বদল করেও যেন নুরুল হুদার মনে কোনা স্বস্তি নেই।
তার শ্যালক মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে। তাই যেকোনো সময় মিলিটারি আসতে পারে। তাই তার স্ত্রী তাকে বাইরে বেরুতে নিষেধ করেন। বাইরে মুঘলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। সেই বৃষ্টিতে ছাতায় কাজ হবে নাভেবে তার স্ত্রী শালক মিন্টুর রেইনকোটটি বের করে দেন।
রাস্তায় রিক্সা নেই, হাঁটতে হাঁটতে বাসস্ট্যান্ডে যান তিনি। লাল রঙের স্টেট বাসে ওঠেন তিনি। বাসে যাত্রী কম। ভেজা রেইনকোটটি নিয়ে বাসে ওঠায় রেইনকোটের পানি পড়তে লাগলো বাসের ভিজে মাটিতে কিন্তু বাসের ভেতরের যাত্রীরা যেন সাহস করে নুরুল হুদাকে কিছু বলতে পারছে না।
বোসে উটতে যাওয়া লোজজনদের মনে হচ্ছে মিলিটারির দালাল। পথিমধ্যে মিলিটারিরা ঔ গাড়িথামিয়ে ভেতরে কড়া নজর দিয়ে ছেড়ে দেয়।
কলেজে আসার পর শিক্ষকদের ভেতর থেকে নুরুল হুদা ও আব্দুস সাত্তার মৃধাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। ছোখ বাঁধা অবস্থায় তাদের ওপর চলে নির্মম নির্যাতন। পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধান জানার চেষ্টা করে।
কলেজের আলমারি (৩টি অফিসের জন্য, বোটানি-হিস্টরি-জিওগ্রাফি ডির্পাটমেন্টের জন্য ২টি করে, ইংরেজির জন্য ১টি; সর্বোমোট ১০টি) বয়ে নিয়ে এসেছিলো যারা, ধারণা করা হয় সেই কুলিরাই ছিল মুক্তিযোদ্ধা এবং তারা ছদ্মবেশেধারণ করেছিল।
এবং তারাই বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। নুরুল হুদা তাদের ঠিকানা দিলেই তারা তাকে ছেড়ে দিবে। ছাদের আংটার সঙ্গে ফুলানো অবস্থায় তাকে চাবুক মারা হয়। একসময় তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও কুলিদের ঠিকানা জানার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু ঠিকানা বলেন না। মুক্তিযোদ্ধার রেইনকোটটিই তাকে এক নতুন বোধে, নতুন চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে।
ছদ্মবেশী মুক্তিযোদ্ধাদেরর সঙ্গে তার আতাঁত রাখার উত্তেজনায় পিঠে একের পর এক চাবুকের আঘাতে রক্ত ফরে পড়ার দিকে তার আর মনোযোগ দেওয়া হয়ে ওঠে না।
পরিশেষে বলা যায়, মুক্তিযোদ্ধা শ্যালকের রেইনকোট গায়ে দিয়ে সাধরণ ভিত্ব প্রকৃতির নুরুল হুদার মধ্যে যে সাহস ও দেশপ্রেম সঞ্চারিত হয় তারই ব্যঞ্জনাময় প্রকাশ ঘটেছে এ গল্পে।
রেইনকোট গল্পের মূলভাব ভিডিওতে দেখুন
পরর্বতীতে রেইনকোট সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর সংযোজন করা হবে... ভালো লাগলে আপনার ফেসবুক টাইমলাইলে শেয়ার করে রাখতে পারেন বারবার রিভিশনের কাজটা সহজ হবে।
Tags:
education